ঢাকা: ‘বস আমার নগ্ন ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন তার কথামতো চলতে হবে।’ শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন বড় বড় হোটেলে তার সঙ্গে যেতে আমাকে বাধ্য করেছিলেন।’
সাবেক এক বসের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও হুমকি দেয়ার এমন অভিযোগে মামলা করেছেন প্রবাসী এক নারী।
গেল বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ, প্রতারণা, ধর্ষণের ভিডিও ধারণের অভিযোগে মামলা করেছে। তবে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।
মামলার অভিযোগে ৩৮ বছর বয়সী ওই নারী উল্লেখ করেছেন, ভারতের হায়দরাবাদে একটি অফিসের একই বিভাগে আমরা চাকরি করতাম। কাজের খাতিরে ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হতো। সাবেক ওই বস আমাকে ভারতে যৌন নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হননি। আমি দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চলে আসি। ধর্ষণের উদ্দেশ্যে সেখানেও ওই বস গিয়েছেন। নিয়মিত হয়রানিও করছেন।
ওই নারী আরো বলেন, আমরা টেলিফোনে নিয়মিত কথা বলতাম। প্রায়ই তিনি কাজের জন্য গ্রামে যাতায়াত করতেন। ধীরে ধীরে আমাকে তার প্রকল্পে যুক্ত করতে থাকেন। সবার সামনে আমার কাজের প্রশংসা করতেন। আমাদের বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও ছিল। তবে তিনি তার স্ত্রী সম্পর্কে সব সময়ই নেতিবাচকভাবে বাজে কথা বলতেন।
স্ত্রী সম্পর্কে ওই বস জানিয়েছিলেন, তার স্ত্রী অন্যের হাত ধরে পালিয়ে গেছেন। এই পরিস্থিতিতে তার একজন ভালো বন্ধু দরকার। ২০১৩ সালে মার্চের এক সন্ধ্যায় গুরুগ্রামে ওই নারী বাসায় হাজির হন বস। সে সময় ওই নারী বাসায় একাই ছিলেন। ওই বস তাকে কোমল পানীয় পান করতে দেন। নিজেও পান করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ওই নারী অচেতন হয়ে পড়েন।
চেতনা ফিরলে ওই নারী নিজেকে শোওয়ার ঘরের বিছানায় নগ্ন অবস্থায় দেখতে পান। পাশের চেয়ারে বসে আছেন তার বস। এ সময় ওই বস তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, এই ঘটনা যেন কাউকে না বলা হয়। বললে চাকরি তো যাবেই, নষ্ট হবে সম্মানও।
ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘বস আমার নগ্ন ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বললেন, তার কথামতো চলতে হবে। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন বড় বড় হোটেলে তার সঙ্গে যেতে তিনি আমাকে বাধ্য করতেন। যখনই আমি যেতে চাইতাম না তখনই তিনি আমার স্বামীর কাছে সব ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিতেন। এভাবেই আমাকে মানসিক ও যৌন নির্যাতন করতেন।
নির্যাতিতা নারী আরো বলেন, শুধু তাই নয়, বস আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নেয়াও শুরু করলেন। আমি তাকে লাখ লাখ টাকা দিয়েছি। একপর্যায়ে তিনি ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। এর বিনিময়ে কথা দিলেন, আর নির্যাতন করবেন না। আমি তাতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু কিছুদিন পরেই আবারও তার নির্যাতন শুরু হয়।’
মামলায় ওই নারী আরো বলেন, বস আমার চরিত্র সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়ে আমার স্বামীর কাছে বার্তা পাঠাতেন, ইমেইল করতেন। তার পাঠানো ইমেইল দেখে মনে হয়েছে তিনি আমাকে এখনো অনুসরণ করছেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তা থেকে বিরত ছিলাম।
ওই নারী শেষে উল্লেখ করেন, ‘একদিন মেলবোর্নের রাস্তায় হাঁটছিলাম। এ সময় পেছন থেকে কেউ একজন আমার কাঁধে হাত দেয়। ঘুরে দেখি ওই বস। তিনি আবার হুমকি দিয়ে বললেন, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও।’
গো নিউজ২৪/এএইচ
