ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদে কার কী?


গো নিউজ২৪ | নীলা বুলবুল প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৭, ০৮:২৪ পিএম
তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদে কার কী?

ঢাকা: তারকা জুটি তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে গত মে মাসেই। এতোদিন বিষয়টি গোপন ছিল। গেল ১৯ জুলাই তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন নিয়ে গণমাধ্যমে খবর আসে। পরদিন ২০ জুলাই তারা দুজনে যৌথভাবে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে বিচ্ছেদের সত্যতা স্বীকার করেছেন। সেই সঙ্গে এমন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য ভক্তদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।

তবে যারা তাহসান-মিথিলাকে সুখী তারকা দম্পতির মডেল হিসেবে ভেবে আসছিলেন তাদের কাছে ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য। তারা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না ঘটনাটা। দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়েই তারা তাহসান-মিথিলার সংসার ভাঙার পেছনের কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছেন।

অপরদিকে, অতি উৎসাহী ভক্তরা ইতোমধ্যে ‘তাহসান-মিথিলার ডিভোর্স মানি না, মানব না’ বলে স্লোগানও দেয়া শুরু করেছেন। বিশেষত দুই তারকা জুটির ডিভোর্স ঠেকাতে তারা খুলে ফেলেছেন ফেসবুক ইভেন্টও। কর্তৃপক্ষ এর নাম দিয়েছে ‘তাহসান-মিথিলার ডিভোর্স মানি না, মানব না’। ইভেন্টের মেয়াদ সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। তারা শাহবাগে সমাবেত হতে চাইছেন। গোয়িং অপশনে দেখা গেছে দুই হাজার সাতশজনকে।

সেই ইভেন্টের ডিটেইলস বর্ণনায় দাবি করা হয়েছে, ‘তাহসান-মিথিলার ডিভোর্স একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এর পেছনে যাদের হাত রয়েছে তাদের পর্দা ফাঁস করতে হবে। সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি কার্যকর করতে হবে’।

শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের নিয়ে ভক্তদের এমন পাগলামি এর আগেও হয়েছে। তবে তাহসান মিথিলার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অন্যরকম হয়ে গেছে। এমন বিচ্ছেদ আগে দেখা যায়নি। কেউ কেউ এটাকে ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর বিচ্ছেদ’ বলেও আখ্যা দিচ্ছেন। কেননা, দুজনের মধ্যে সুন্দর বোঝাপড়া আর সমঝোতা বজায় রেখেই বিচ্ছেদে গিয়েছেন তারা। যেটা সাধারণত দেখা যায় না। 

মিথিলা-তাহসান

আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, যখন কোনো তারকা দম্পতি কিংবা শোবিজ অঙ্গনের কেউ বিচ্ছেদের পথে যান তখন একে অপরদিকের দিকে নানা অভিযোগের তির ছুঁড়তে থাকেন। দুজনেই ক্ষতবিক্ষত হন। মাঝখান থেকে ভক্তরা কারো দিকেই সহানুভূতির দৃষ্টি দিতে পারেন না। কিন্তু তাহসান-মিথিলার ক্ষেত্রে ভক্তরাই বেশি ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছেন। আর সে কারণেই পই পই করে খুঁজে ফিরছেন তাদের প্রিয় তারকা দম্পতির বিচ্ছেদের নেপথ্যের অপশক্তিকে।

ব্যক্তিত্বের সংঘাতই বলা হোক কিংবা বোঝাপড়ায় দূরত্ব সৃষ্টির কথাই বলা হোক, যারা গেল ১১ বছর ধরে সুন্দর সম্পর্কের মধ্য দিয়ে গেছেন, হয়েছেন কন্যা সন্তানের বাবা-মা- এতোদিন পর তাহলে কীভাবে সামনে আসে এসব কারণ? এসব কারণ তো গোড়ার দিকেই কাজ করার কথা। এতোদিন পর মাথা চাড়া দেয়ার নেপথ্যে থাকতে পারে অন্য কোনো প্রভাবক।

বলা হচ্ছে, তাহসান-মিথিলা গেল দুবছর ধরে আলাদা থাকছিলেন। এর মধ্যে তারা কিন্তু কেউ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তাহলে হঠাৎ করেই কেন দুমাস আগে এতো বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলেন? তাহলে সম্প্রতি এমন কোনো শক্তিশালী প্রভাবক কি তাদের মধ্যে এসে হাজির হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে?

দুদিন আগে সামাাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের (ফেসবুক) নিউজফিডে একটি খবর ঘুরে বেড়াতে দেখা গেল। তাতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং করতে গিয়ে জনপ্রিয় ও প্রতিভাবান এক ফটোগ্রাফারের কাছাকাছি আসেন মিথিলা। তাদের একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় চোখেও পড়ে। দুমাস আগে এ ঘটনা জানার পর ভেঙে পড়েন তাহসান। এরপরই সেই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন তারা।

কিন্তু অনেক ভক্ত এটা মানতে নারাজ। কেননা, শোবিজ অঙ্গনে যারা কাজ করেন তারা এমন ঘটনার শিকার হন হরহামেশাই। তাই বলে দীর্ঘদিনের সংসার ভাঙার মতো কোনো পরিস্থিতি তাতে সৃষ্টি হয় না। বিশেষ করে মিথিলার মতো দায়িত্বশীল ও উচ্চ শিক্ষিতা মা, জনপ্রিয় অভিনেত্রী, গায়িকা।

তবে কোনো ভক্ত আবার এসব কিছু উড়িয়েও দিতে পারছেন না। সবকিছু আমলে নিয়েই তারা ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাহসান মিথিলার বক্তব্য বিশ্লেষণের চেষ্টা করে সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করছেন। সম্পর্ক ভেঙে দেয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বার্থপর সিদ্ধান্ত যে তারা দুজনে নিতে পারেন- এমন বিশ্বাস অন্তত এখন পর্যন্ত কেউ নিতে পারছেন না।

মিথিলার দীর্ঘশ্বাস ভরা সেই বক্তব্য বিশ্লেষণ করার দাবি রাখে অবশ্য। বিচ্ছেদের ঘোষণার দেয়ার পর তিনি সহজভাবেই বলেছেন, ‘আমাদের বিবাহিত জীবন দীর্ঘ ১১ বছরের। ১৪ বছর ধরে একজন আরেকজনকে চিনি। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আসলে হঠাৎ করে নিইনি। আমাদের বোঝাপড়ায় অনেক দিন ধরে সমস্যা হচ্ছিল। ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বও প্রকট ছিল।’

মিথিলা আরো বলেছেন, ‘জীবন নিয়ে শুরুতে একধরনের পরিকল্পনা ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে তা বদলে গেছে। তারপরও এতো বছরের সম্পর্ক তো আর এতো সহজে কেউ ভেঙে ফেলতে চায় না। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কারণ, আমাদের একটি সন্তান আছে। দুই বছর ধরে আলাদা থাকলেও সন্তান আর সংসারের কথা ভেবে আমরা একসঙ্গে কাজ করে ভালো থাকার চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত আমরা বুঝতে পেরেছি, সম্পর্কটা আর টিকবে না।’

মিথিলা উল্লেখ করেছেন, তাদের মধ্যে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব প্রকট ছিল। আবার বলেছেন, ‘জীবন নিয়ে শুরুতে একধরনের পরিকল্পনা ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে তা বদলে গেছে।’ এ দুটি বিষয় বিশ্লেষণ করলেই আসল কারণ বের হয়ে আসার কথা। কিন্তু ভক্তদের মন কিছুতেই মানতে চায় না। কেননা, এমনটা যদি মেনে নিতেই হয়, তাহলে তো মিথিলা তাহসানের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের তিন বছরের প্রেমকে বোঝাপড়াহীন আবেগ দিয়েই বিচার করা উচিত। আর বিয়ের পর ১১ বছরের জীবনকে ফাঁপা বাস্তবতা বলেই ধরে নিতে হবে। আর দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের নিশ্চয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

মিথিলা-তাহসান

তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদ একটা মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার হিসেবে চিহ্নিত করলে নতুন প্রজন্মের কাছে ভালো কোনো খবর দেয়ার সুযোগ থাকবে না আমাদের। সুখী দম্পতি বিশেষ করে এমন তারকা দম্পতিদের নিয়ে প্রশ্ন তোলা রোধ করা যাবে না। তবে যেটাই হোক না কেন, তাহসান মিথিলার বিচ্ছেদের ‘দৃশ্যমান’ সৃর্নিদিষ্ট কারণ জানার ওপর নির্ভর করছে শোবিজ অঙ্গনের ওপর আমাদের বিশ্বাস-অবিশ্বাসের অনেকখানি।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ২০০৩ সালে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও মডেল তাহসান ও মিথিলা। ২০০৬ সালে তারা বিয়ে করেন। সুখী তারকা দম্পতি হিসেবে তারা পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘ সাত বছর পর ২০১৩ সালে তাদের ঘরে আসে কন্যাসন্তান (আইরা তেহরীম খান)। ২০১৫ সালের পর তাদের দাম্পত্যে চিড় ধরে। এরপর থেকে সবার অগোচরে তারা আলাদা থাকা শুরু করেন। চলতি বছরের মে মাসে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। গত ২০ জুলাই ফেসবুকে বিচ্ছেদের বিষয়টি স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান ভক্তদের কাছ থেকে।

গো নিউজ২৪ডটকম/এন    

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ