ঢাকা: গোয়েন্দা পুলিশ বলছে মঙ্গলবার প্রায় ১২ পাউন্ড সাপের বিষসহ পাঁচজনকে আটক করেছে তারা। ছয়টি কাঁচের জারের ভেতর এইসব বিষের কিছু অংশ বাদামি রংয়ের তরল এবং বাকিগুলো সাদা এবং নীল রংয়ের পাউডার।
প্রতিটি কৌটায় ইংরেজিতে লেখা ছিল-রেড ড্রাগন কোম্পানি, ফ্রান্স। আরো লেখা ছিল-কোবরা পয়জন অর্থাৎ কেউটে সাপের বিষ।
গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও ঢাকায় এরকম সাপের বিষের বড় একটি চালান ধরেছিল পুলিশ। তখন বলা হয়েছিল, বাজারে এর দাম ৪৫ কোটি টাকা।
দুটি ঘটনাতেই জিজ্ঞাসাবাদের সময় আটককৃতরা পুলিশকে বলেছে চোরাইপথে বিদেশ থেকে এনে এই সাপের বিষ তারা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিতে বিক্রি করে। কিন্তু এই ভাষ্য কতটা গ্রহণযোগ্য?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের অন্যতম শীর্ষ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেছেন, “এই কথা ‘ডাহা মিথ্যা’।
তিনি বলেন, তার জানামতে, বাংলাদেশে সাপের বিষ ব্যবহার করে কোনো ওষুধ তৈরি হয় না। এরকম ওষুধ তৈরির কোনো অনুমোদনও নেই, সেই প্রযুক্তিও নেই। আমার জানামতে, সাপের বিষ ব্যবহার করে কোনো ওষুধ পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই তৈরি হয়না। “
তিনি বলেন, “সাপের বিষ মূলত ব্যবহার হয় ক্যানসার এবং অল্প কিছু উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-ভেনম তৈরিতে। সে ধরনের ৮/১০টি ওষুধ কোম্পানি ইউরোপ ও আমেরিকার কয়েকটি দেশে রয়েছে। “
তাহলে এই সব সাপের বিষ কেন আসছে বাংলাদেশে? জানতে চাইলে অধ্যাপক ফারুক বলেন, “এগুলো সত্যিকারের সাপের বিষ কিনা তা নিয়েই তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ১২ পাউন্ড কেউটে সাপের বিষ পেতে হাজার হাজার সাপ থেকে তার সংগ্রহ করতে হবে। “
তিনি সন্দেহ করছেন, সাপের বিষের নাম দিয়ে কোনো ধরনের মাদক হয়ত এসে থাকতে পারে। আটক কথিত এই বিষ খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে।
তিনি বলেন, “এগুলো বিষ হলেও নিশ্চিতভাবে তার গন্তব্য অন্য কোনো দেশে, বাংলাদেশ শুধু ট্রানজিট। সম্ভাব্য গন্তব্য হতে পারে চীন, কারণ সেদেশে সাপের বিষ ব্যবহারে নেশা করার একটি চল রয়েছে বলে শোনা যায়। “ খবর: বিবিসি
গোনিউজ২৪/এম