নাবালিকা মেয়েদের যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে। অপরিণত বয়সের মেয়েদের তারা নানা কৌশলে আটকে রাখেন এবং তাদের যৌনকর্মে বাধ্য করেন। এ নিয়ে পুলিশ বিভাগে অভিযোগ জানিয়ে কোনো সুফল না পেয়ে মামলা করেছেন জেসমিন আবুসলিন নামের এক ভুক্তভোগী।
তাই পুলিশ বিভাগের দ্বিতীয় পর্যায়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওই মামলা করেছেন তিনি। জেসমিনের দাবি, অপরিণত বয়সে তাকে কমপক্ষে এক ডজনেরও বেশি পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বিছানায় যেতে হয়েছে। তারা তাকে যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহার করেছে। আগেও তিনি অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পান নি।
তবে দ্বিতীয় অভিযোগে তিনি বলেছেন, তাকে যৌনতার ফাঁদে ফেলেছেন কমপক্ষে ৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা। তাদের তিনি কোনোভাবেই থামাতে পারছেন না। তাই বৃহস্পতিবার তিনি পুলিশের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় বলা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বিভাগে অভিযোগ করা হলেও সেখানে যৌনতা নিপীড়নের বিষয়ে তারা চোখ বন্ধ করে রাখে।
জেসমিন দাবি করেন, শহরের বিভিন্ন স্থানে কয়েজ ডজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তাকে ঘুমাতে হয়েছে। তারা তার শরীর ভোগ করেছে। এমনকি তাকে রাস্তায় পতিতাবৃত্তি করতে উৎসাহিত করেছে তারা। এক কর্মকর্তা তাকে ভাড়া করে হোটেলে নিয়ে যেতেন। সেখানে খদ্দের ধরাতেন তিনি। এজন্য কী পোশাক পরতে হবে তাও বলে দিতেন ওই কর্মকর্তা।
জেসমিন আবুসলিনের বয়স বর্তমানে ১৯ বছর। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ডের এক পুলিশ সদস্যের মেয়ে। এর আগে জেসমিন যে মামলা করেছিলেন, তা ৯ লাখ ৮৯ হাজার ডলারের বিনিময়ে মিটিয়ে দেয়া হয়। তার আইনজীবী জানান, পুলিশ বিভাগের তিন থেকে চারজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা রয়েছে জেসমিনের।
এদিকে তার এই অভিযোগে অকল্যান্ড পুলিশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগে জেসমিন বলেছেন, অপরিণত বয়সের মেয়েদের সঙ্গে যৌনতায় পুলিশকে সুরক্ষা দিচ্ছে শহরের পুলিশ বাহিনী। রিখমন্ডের ছয় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগে তিনি বলেছেন, তাকে যৌনকাজে ব্যবহার করতে ‘পাচার’ করেছিলেন তারা।
জেসমিন শিশু বয়সে যৌনকর্মের পেশা বেছে নেন। পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের জন্য তাকে ‘এক্সক্লুসিভ’ বিবেচনা করা হতো। তাদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করা হতো। বিনিময়ে অর্থ পেতেন তিনি। সুরক্ষাও পেতেন। জেসমিনের আইনজীবী জন বারিস একটি গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের এমন কর্মকাণ্ড সহ্য করার মতো না। তারা একজন বিপদগ্রস্ত একটি মেয়ের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে শনাক্ত করা হয়েছে ১১ পুলিশ সদস্যকে। তার মধ্যে একজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। একজনের পদাবনতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে এবং দুইজনকে ৮০ ঘন্টা ও ১২০ ঘন্টা বরখাস্ত করা হয়েছে। সতর্ক করে চিঠি দেয়া হয়েছে ৫ জনকে।
গো নিউজ২৪/ আরএস
