সুন্দরী হয়ে উঠতে কে না চায়। আর মেয়েয়েরা তো এব্যাপারে পুরোই সিরিয়াস। তবে কিভাবে সুন্দরী হয়ে উঠা যায় এই ধারণা কারো তেমন নেই। বেশিরভাগই মনে করেন বিউটি প্রডাক্ট মুখে লাগালেই সৌন্দর্য বাড়ে। এই ধারণা যে কতটা ভুল তা প্রমাণ করতেই এই লেখা।
কে কতটা সুন্দর হয়ে উঠবেন তা অনেকটাই নির্ভর করে গোসলের ওপর। একেবারে ঠিক শুনেছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে গোসল করলে শরীরের সব ক্লান্তি দূর হয়। সেই সঙ্গে স্ট্রেস কমে এবং অবশ্যই সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। আপনি নিশ্চয় ভাবছেন, গোসলের সঙ্গে সৌন্দর্যের যোগ কোথায়, তাই তো? পানিতে বিশেষ কিছু উপাদান মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলেই দেখবেন আপনার সৌন্দর্য কোথায় গিয়ে পৌঁছায়।
কী কী উপাদান মেশাতে হবে? জেনে নিন-
১. এসেনশিয়াল তেল
যেমনটা সকলেরই জানা আছে যে ত্বককে সুন্দর করতে এসেনশিয়াল অয়েলের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। তাই তো পানিতে এই তেল মিশিয়ে গোসল করলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। আর যদি কোনও এসেনশিয়াল অয়েল হাতের কাছে না পান, তাহলে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। এক বালতি পানিতে পরিমাণ মতো তেল মিশিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে সেই পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।
২. দুধ
এতে উপস্থিত ভিটামিন এবং প্রোটিন ত্বককে উজ্জ্বল করে। সেই সঙ্গে ত্বকের আদ্রতা বজায় রেখে নানা ধরনের ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়। কতটা দুধ দিয়ে গোসল করতে হবে? এক বালতি হালকা গরম পানিতে ১ কাপ দুধ মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর সেই পানি দিয়ে স্নান করুন।
৩. ওয়াইন
এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপার্টিজ, যা ত্বকের বয়স কমিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন এক বালতি পানিতে জলে ৫-৮ চামচ ওয়াইন মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে স্নান করুন। তবে ওয়াইন মেশানোর সঙ্গে সঙ্গে স্নান করবেন না। কিছু সময় পর করবেন। তাহলেই দেখবেন অল্প দিনেই কেমন বদলে যাবে আপনার ত্বকের চরিত্র।
৪. মধু
অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকার কারণে ত্বককে সুন্দর করতে নানাভাবে সাহায্য করে মধু। তাই যদি নরম তুলতুলে, ফর্সা ত্বক পেতে চান, তাহলে প্রতিদিন হালকা গরম পানিতে ১০-১২ চামচ মধু মিশিয়ে গোসল করুন। উপকার পাবেন। প্রসঙ্গত, মধু মিশ্রিত পানিতে গোসল করলে ত্বকের আদ্রতাও বৃদ্ধি পায়। তাই তো যাদের শুষ্ক ত্বক, তারা এই পদ্ধতির সাহায্য নিলে দারুন উপকার পাবেন।
৫. ওটস
ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে ওটমিল বাথের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। পরিমাণ মতো পানিতে কয়েক চামচ ওটস মিশিয়ে যতক্ষণ খুশি গোসল করুন। এমনটা করলে ত্বকের উপরিঅংশে জমে থাকা মৃত কোষের আবরণ সরে যায়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, যাদের ত্বক খুব স্পর্শকাতর বা ড্রাই, তারা ওটমিল মেশান পানি দিয়ে গোসল করলে দারুন উপকার পাবেন।
৬. লবণ
সাধারণ লবণ নয়, গোসলের জন্য ব্যবহৃত লবণ বা বাথিং সল্ট পানিতে মিশিয়ে গোসল করলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়। সেই সঙ্গে ত্বকের উপরিঅংশে জমে থাকা মৃত কোষ এবং ময়লা ধুয়ে গিয়ে ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে। ২-৩ চামচ বাথিং সল্ট পরিমাণ মতো পানির সঙ্গে মিশিয়ে গোসল করতে হবে।
৭. ঔষধি
নরম, মোলায়েম ত্বক পেতে চান? তাহলে প্রতিদিন পানিতে ঔষধি মিশিয়ে গোসল করুন। এমনটা করলে শরীরে রক্তচলাচল বেড়ে যায়। ফলে ত্বক সুন্দর হতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এমন পদ্ধতিতে গোসল করলে ত্বকের পাশপাশি শরীরও চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
৮. নারকেল তেল
যেমনটা আগেও বলেছি পানিতে নারকেল তেল মিশিয়ে গোসল করলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। প্রতিদিন যদি এমনটা করা যায়, তাহলে ত্বক নরম হয়। সেই সঙ্গে স্কিনের প্রদাহ এবং জ্বালাভাবও কমে। প্রসঙ্গত, যাদের ত্বক খুব শুষ্ক, তারা যদি প্রতিদিন নারকেল তেল মেশানো পানিতে গোসল করেন তাহলে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে।
৯. গ্রিন টি
এতে রয়েচে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের পাশপাশি চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে। তাই যদি অপরূপ সুন্দরী হয়ে উঠতে চান, তাহলে আজ থেকেই অল্প করে গ্রিন টি মেশানো পানিতে গোসল করা শুরু করুন। প্রসঙ্গত, যেদিন স্ট্রেস খুব বেশি থাকবে, সেদিন গ্রিন-টি দিয়ে গোসল করবেন। দেখবেন মানসিক চাপ নিমেষে কমে যাবে। ইচ্ছা হলে গ্রিন টির জায়গায় মিন্ট টি বা লেবু চাও পানির সঙ্গে মিশিয়ে গোসল করতে পারেন। একই উপকার পাবেন।