কুষ্টিয়া: ৮০ বছরের বয়স্ক বিধবা আমেনা খাতুন লাঠির উপর ভর করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোনো রকমে চলেন। স্বামী মারা গেছেন চার বছর আগে। বর্তমানে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে খুপরি ঘরের মধ্যে তাকে থাকতে হয়। অনাহারে অর্ধাহারে চলে তাদের সংসার।
অভাবে চলা তাদের এই সংসারে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য কেউ নেই। আমেনার বয়স ৮০ বছর হলেও তাকে যেন বৃদ্ধই মনে করেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এ কারণে তার ভাগ্যে জোটেনি বিধবা কিংবা বয়স্ক ভাতার কার্ড।
আমেনা খাতুন মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহ গ্রামের মৃত ইসমাইলের স্ত্রী।
সাংবাদিক দেখে জল ভরা ঝাপসা চোখে তাই আমেনা খাতুনের প্রশ্ন, ‘৮০ বছর হইছে, আর কতো হলে আমি বিধবা কিংবা বয়স্ক ভাতার কার্ড পাব?’
তিনি জানান, পৃথিবীতে তার আপন বলতে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে খুপরি ঘরে থাকছেন। ছেলের দেখাশুনা তাকেই করতে হয়। স্বামী নানা রোগে শোকে বছর চারেক আগে মারা গেছেন।
স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি নিজে শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। এখন সেটাও আর পারেন না। সরকারি কোনো অনুদান পান না। তার ভাষায়- স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছে বার বার ধরনা দিয়েও কোনো সুবিধা পাননি। টাকা ছাড়া নাকি ওইসব সুবিধা পাওয়া যায় না।
বিষয়টি নিয়ে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, ‘আমার গ্রামে ৪ থেকে ৫ জন এরকম বয়স্ক বিধবা মানুষ আছে। তার মধ্যে একজনকে এবার কার্ডের আওতায় এনেছি। সিরিয়াল অনুযায়ী আমেনা খাতুনকে আগামী বছর বয়স্ক ভাতার তালিকায় আনা হবে।‘
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আবু রায়হান বলেন, ‘বয়স্কভাতা কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড দিতে সময় লাগে। নতুন উপকারভোগীর নামের তালিকা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মিটিং এর মাধ্যমে যাচাই বাছাই শেষে তালিকা প্রণয়ণ করা হয়ে থাকে। তালিকা পেলেই ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’
গো নিউজ২৪/এমবি